বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের জন্য জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অবদান রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। শেহবাজ শরীফ উল্লেখ করেন, বেগম জিয়া পাকিস্তানের একজন নিবেদিতপ্রাণ বন্ধু ছিলেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের সরকার এবং পাকিস্তানের জনগণ এই দুঃখের মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকতে একত্রিত হয়েছি। এই কঠিন সময়ে আমাদের সকলের চিন্তা ও প্রার্থনা তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের জন্য। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তালা তার আত্মার শান্তি কামনা করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এই নেত্রীর মৃত্যু মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হয়। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বেগম জিয়ার মৃত্যুতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এর পাশাপাশি, বিএনপি এখন থেকে সাতদিন শোক পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
খালেদা জিয়া মূলত আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনামলে কঠিন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। কারাবরণ, চিকিৎসা না পাওয়াসহ নানা শারীরিক সমস্যা তাদের মোকাবেলা করতে হয়। করোনার কারণে শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পরও তাকে গুলশানের ফিরোজা বাসায় বন্দি রাখা হয়। চিকিৎসার অভাবে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতা দেখা দেয়।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়, যা পরে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। এক পর্যায়ে ৩৫ দিনের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর, ৫ আগস্ট সরকার পতনের লক্ষ্যে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। পরদিন ৬ আগস্ট, প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া মুক্তি পান।
এর পরে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি লন্ডন যান। ১১৭ দিন পর্যবেক্ষণে থাকার পর ৬ মে দেশে ফিরে আসেন। তার স্বাস্থ্যে কিছু উন্নতি হলেও নানা জটিলতা ও বার্ধক্যের কারণে তিনি বারবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।
গত ২৩ নভেম্বর তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি এক মাসের বেশি চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজকের এই খবরের মাধ্যমে আমরা তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

