গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অন্তবর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিএনপি না যোগ দিলে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে নির্বাচন করবে।
বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টির পক্ষে মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার ও আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম একথা জানান।
রোববার সন্ধ্যায় গণভবনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। রাত সাড়ে ৭টার দিকে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে গণভবনে যান জাপা চেয়ারম্যান। ওই বৈঠকের খবর সংগ্রহের জন্য গণভবনের গেটে এসেছেন সকল ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা। তবে ভেতরে ঢোকার সুযোগ পেয়েছেন শুধুমাত্র টেলিভিশনের রিপোর্টার ও ক্যামেরাম্যানরা।
বৈঠকে সর্বদলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মহাজোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকটি সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয়, চলে ৯টা পর্যন্ত। পরে নৈশভোজে অংশ নেন জাতীয় পার্টির নেতারা।
নৈশভোজের আগে সৈয়দ আশরাফ ও রুহুল আমিন হাওলাদার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। নির্বাচন হবে কিনা -এ আশঙ্কা প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেন, “আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবে। জানুয়ারির মধ্যভাগে নতুন নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করবে।”
তিনি বলেন, “সর্বদলীয় সরকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা না মানলে বিএনপির সঙ্গে আর কোনো আলোচনা হবে না। বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে নির্বাচন করবে।”
জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাবে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে জাতীয় পার্টি এককভাবে নাকি জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে।”
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদকে রোববারের নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১৫টি গাড়ির বহর নিয়ে এরশাদ গণভবনে প্রবেশ করেন। এ সময় এরশাদের গাড়ির সামনের সিটে ছিলেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, পাশের সিটে ছিলেন মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার। পরে একে একে প্রবেশ করেন অন্য নেতারা। সবার শেষে প্রবেশ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ। জাপার এই প্রতিনিধিদলে এরশাদপত্মী রওশন এরশাদ ছিলেন না।
নৈশভোজে অংশ নেয়া ১৪ নেতা হলেন জাতীয় পাটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ, মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার, বাণিজ্য মন্ত্রী জিএম কাদের, মোস্তাফা জামাল হায়দার, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ব্রিগেডিয়ার অব. কাজী মাহমুদ হাসান, জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, কাজী ফিরোজ রশিদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, ফকির আশরাফ, আবু হোসেন বাবলা, এস এম ফয়সল চিশতী, মেজর অব. খালেদ ।
অন্যদিকে বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন-সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমসহ অনেকে।