শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসমাবেশে বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, “আর কাল-বিলম্ব না করে নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। মনে রাখবেন আজকের পর থেকে মহাজোট সরকার অবৈধ।”
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে প্রেসক্লাবে এসে পৌঁছান বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, “নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না, হতে দেওয়া হবে না। সরকার প্রধান করার জন্য বাংলাদেশে এখনো অনেক শিক্ষিত, নিরপেক্ষ, নির্দলীয় লোক আছে।”
খালেদা জিয়া বলেন, “বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশকে কিছুই দিতে পারেনি। হলমার্ক, পদ্মাসেতু, বিভিন্ন ব্যাংক করে দেশের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। অথচ তারা সভাসমাবেশে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে নাকি দেশ পিছিয়ে যাবে। কিন্তু আমি বলতে চাই ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় গেলে দেশ শতভাগ এগিয়ে যাবে। দেশের উন্নয়নে আমরা কাজ করবো।”
তিনি বলেন, “ক্ষমতায় স্থায়ীভাবে থাকার জন্যই আপনারা এসেই তড়িঘড়ি করে সংবিধান সংশোধন করলেন। অথচ সংবিধান সংশোধনের কোন প্রয়োজন ছিল না। এই সংবিধানের জন্যই আপনারা ১৭৩দিন হরতাল করেছিলেন। দেশব্যাপী যে ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও, গান পাউডার দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারার মতো নৃশংস হত্যাকাণ্ড আপনারা করেছিলেন।”
“আপনারা এর আগেও বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন কিন্তু সেবার আপনাদের প্রচেষ্টা সফল হয়নি। এবারো বাকশাল কায়েম করে চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকার যে স্বপ্ন আপনারা দেখছেন সেটা এদেশের মানুষ আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিহত করবে” উল্লেখ করেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া বলেন, “আপনারা বিভিন্নসময় আপনাদের গুণগান গেয়ে বেড়ান। আপনাদের ধারণা আপনারা অনেক জনপ্রিয়। তাহলে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। দেখুন জনগণ আপনাদের সাথে আছে কী না।”
তিনি বলেন, “দেশব্যাপী বিরোধীদলকে দমিয়ে রাখা হচ্ছে, ১৪৪ ধারা জারি করে সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। আসলে নির্বাচনকে ভয় পায় সরকার তাই নিজেদের অধীনেই নির্বাচন করতে চায়।”
ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির আশ্বাস দেন বেগম জিয়া।
২৫ অক্টোবরের সমাবেশে কোন প্রকার বাঁধা না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় আসুন এক হয়ে কাজ করি। আগামীকাল আমাদের মহাসমাবেশে কোন প্রকার বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আর যদি বাঁধা দেন তাহলে এর দায়দায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে।”
চাকরি জাতীয়করণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ, শিক্ষা আইনের খসড়া বাতিল, চাকরিচ্যুত শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে এ মহাসমাবেশ করে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট।
গত ২০ অক্টোবর থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তবে বৃহস্পতিবার শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট আয়োজিত সম্মেলনের অনুমতি দেয় ডিএমপি।