৩১ অক্টোবর ২০১৩। পোর্টাল বাংলাদেশ ডেস্ক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোন সংলাপ গণমাধ্যমে প্রকাশকে স্বাগত জানিয়েছেন| সংলাপ প্রকাশের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ অল্প জানার চেয়ে বেশি জানাই ভালো। ওই কথোপকথনের পুরোটাই মানুষের শোনা দরকার। অল্প জানার চেয়ে মানুষ পুরোটাই জানুক। গতকাল গণভবনে এক যৌথ সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। কথোপকথন বিএনপির তরফ থেকে প্রথম প্রকাশ হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কাছ থেকে প্রথম ফোনালাপ অনেকটা প্রকাশ পায়। পত্রিকায় এ নিয়ে অনেক কথা ছাপা হয়।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোন আলাপে ‘দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে অনেক অপমান সহ্য করেছি’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, উনি অনেক অবান্তর কথা বলেছেন। মানুষের কথা চিন্তা করে আমাকে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছে। আমার ঝগড়া করার ইচ্ছা ছিল না। আমার অনেক ধৈর্য। তারপরও আল্লাহর কাছে খালি বলেছি তিনি যেন আমাকে আরও ধৈর্য ধরার শক্তি দেন। আমি জনগণের কল্যাণ, শান্তির কথা ভেবে ধৈর্য ধরেছি।
তিনি বলেন, ফোনালাপে খালেদা জিয়া অনেক কথা বলেছেন। ওনার এ সমস্যা, ও সমস্যা। একেক সময় একেক কথা বলেছেন, একক শর্ত দিয়েছেন। উনার সব কথারই জবাব আছে। আমি শুধু জনগণের কথা ভেবে সমঝোতা চেয়েছি। কিন্তু উনি তা মানলেন না।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ না নেয়া হলে তিনি হরতাল দেবেন। আলোচনার জন্য আমি নিজে ফোন করলাম। উনার ফোন ধরতে অনেক সময় লাগলো। তিনি আলোচনায় না এসে হরতাল করলেন। কতগুলো মায়ের বুক খালি করলেন। তিনি এদেশের মানুষের জীবন নিয়ে খেলে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমার ডাকে সাড়া দিয়ে হরতাল প্রত্যাহার করলেন না। আমার কথা মানলেন না, শুনলেন না। এতোগুলো জীবন নিয়ে তিনি কী অর্জন করলেন? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গ প্রধানমন্ত্রী বলেন:
‘যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা বিরোধী দলের আন্দোলনের অন্যতম লক্ষ্য’ তিনি আরোও বলেন, বিচার শুরু হয়েছে। সে বিচার করবই। বাংলার মানুষকে অভিশাপ থেকে রক্ষা করবো। কেউ যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাত্ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে ঈশ্বরদীতে বিমানবন্দর চালু হয়েছে। এর আগে সৈয়দপুর ও রাজশাহীতে বিমানবন্দর চালু করা হয়েছে। বিএনপি আমলে এগুলো বন্ধ হয়ে যায়। বিএনপি এমনই উন্নতি করেছে যে, সব বন্ধ হয়ে গেছে, সব ধ্বংস হয়ে গেছে।
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ৩ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সমাবেশ সফল করতে গণভবনে এ বৈঠক হয়। কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, ঢাকা ও আশপাশের জেলার সংসদ সদস্য এবং তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, অ্যাডভোকেট রহমত আলী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, এবি তাজুল ইসলাম, আবদুল মান্নান খান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এম এ আজিজ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মৃণাল কান্তি দাস, অসীম কুমার উকিলসহ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও ঢাকার সংসদ সদস্য এবং মহানগরের অধীন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।