ইউরোতে সবাইকে চমকে দেওয়া আইসল্যান্ড প্রথম বিশ্বকাপে আটকে দিলো গতবারের ফাইনালিস্ট আর্জেন্টিনাকে। লিওনেল মেসির পেনাল্টি মিসের দিন আর্জেন্টাইনরা ১-১ গোলে ড্র দিয়ে শুরু করল বিশ্বকাপের ২১তম আসর। ২০১৬ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেকেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল আইসল্যান্ড। বিশ্বকাপেও তাদের দারুণ পথচলা শুরু হলো ‘ফেভারিট’ আর্জেন্টিনার সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে।
সের্হিয়ো আগুয়েরোর দারুণ গোলে এগিয়ে গেলেও এলোমেলো রক্ষণের মাশুল দিয়েছে আর্জেন্টিনা। মস্কোর স্পার্তাক স্টেডিয়ামে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টাইনদের ‘ডি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলে। দ্বিতীয়ার্ধে আর কেউ গোলের দেখা পায়নি। অথচ মেসি পেয়েছিলেন দলকে জেতানোর সুযোগ।
আইসল্যান্ডের শক্ত রক্ষণের কারণে প্রথম কয়েক মিনিট মাঝমাঠেই বল নিয়ে ঘোরাফেরা করেছে আর্জেন্টিনা। ৫ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে মেসির ফ্রি কিকে প্রথমবার আইসল্যান্ডের বক্সে বল পায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু কোনও অ্যাটাকার বা ডিফেন্ডারের গায়ে না লেগেই বল চলে যায় মাঠের বাইরে।
৩ মিনিট পর আবারও ফ্রি কিক থেকে খানিকটা ভড়কে দেন আইসল্যান্ডের ডিফেন্ডারদের। বেশ নিচু দিয়ে আসা বলটি হেড করতে চেয়েছিলেন তাগিয়াফিকো, কিন্তু তার ঘাড়ে লাগলে বল আর মাঠে থাকেনি।
ম্যাচে গোলমুখে প্রথমবার মেসি শট নেন ১৭ মিনিটে। হান্নেস থর হ্যালডোরসন দারুণ দক্ষতায় বল পাঞ্চ করে বিপদমুক্ত করেন। দুই মিনিট পরই উল্লাসে মাতে আর্জেন্টিনা। ১৯ মিনিটে রোহোর শট বক্সে পান সের্হিয়ো আগুয়েরো। ডান পা দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাঁ পায়ে লক্ষ্যভেদ করেন ম্যানসিটি ফরোয়ার্ড। ২১ মিনিটে আবার মেসির শট লক্ষ্যের দিকে ছুটেছিল, এবারও বাধা দেন হ্যালডোরসন।
আর্জেন্টিনা বেশিক্ষণ এগিয়ে থাকতে পারেনি। তাদের এলোমেলো ডিফেন্সের মাশুল দেয় তারা ২৩ মিনিটে। সিগুর্দসন গোলমুখের সামনে বল দেন, আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক উইলি কাবায়েরো কোনোভাবে বল ঠেকান। কিন্তু তার হাতে লেগে বল ফিরে আসে ফিনবোগাসনের পায়ে। জালে বল পাঠাতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি এফসি অগসবুর্গের এ স্ট্রাইকারের।
৩৩ মিনিটে বিজিয়ার শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে গেলে আর্জেন্টিনার সুযোগ নষ্ট হয়। ৪১ মিনিটে পেনাল্টির জোর আবেদন করলেও পায়নি তারা। আইসল্যান্ডের ডিবক্সে মেজার নিচু ড্রাইভ সিগুর্দসনের হাতে লেগেছিল, কিন্তু ইচ্ছাকৃত ছিল না বলে রেফারি সাড়া দেননি। শেষ মুহূর্তে একটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে আইসল্যান্ড। ৪৫ মিনিটে সিগুর্দসনকে ঠেকিয়ে দেন কাবায়েরো।
৭৭ মিনিটে আবারও পেনাল্টির আবেদন করে গতবারের ফাইনালিস্টরা। পাভনকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেছিলেন সায়েভারসন, কিন্তু রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি। ৭৯ মিনিটে মেসি বক্সের মধ্যে পায়ে বল পেলেও আইসল্যান্ডের ডিফেন্ডার তাকে শট নেওয়ার আগেই দ্রুত গতিতে বল বাইরে পাঠান। ৮১ মিনিটে মেসির বাঁপায়ের বাঁকানো শট অল্পের জন্য গোলবারের পাশ দিয়ে চলে যায়।
আগামী ২১ জুন নোভগোরদে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। পরের দিনে ভোলগোগ্রাদে আইসল্যান্ড মোকাবিলা করবে নাইজেরিয়াকে।