আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে খুলনার পাঁচটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে তিনটির নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার অনিক মানবিক উন্নয়ন সংস্থা (এএমইউএস), মহানগরীর ডেভেলপমেন্ট এডুকেশন অ্যান্ড পিস (ডেপ) এবং খুলনা মুক্তি সেবা সংস্থা (কেএমএসএস)। আর দিঘলিয়ার এএমইউএস ও মহানগরীর ডেপ-এর কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। অপর দুই প্রতিষ্ঠান হচ্ছে রূপান্তর ও নবলোক।
প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রূপান্তর, নবলোক ও কেএমএসএস খুলনার প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম। রূপান্তর নির্বাচন ও নারী উন্নয়ন, নবলোক জলবায়ু পরিবর্তন এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়ে কাজ করে।
কেএমএসএস মাইক্রো ক্রেডিট, ডেলিভারি, এইচআইভি/এইডস সমস্যাসহ স্বাস্থ্য ও মাদকাসক্ত ইস্যুতে কাজ করে। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আফরোজা আক্তার মঞ্জু মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সে সুবাধে তিনি নিজে ২০১৪ সালের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক ছিলেন। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এবারই প্রথম তার সংস্থা তালিকাভুক্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরু করলেও নিবন্ধন পায় ২০০০ সালে।
ডেপ ১৯৮৭ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করলেও ১৯৯১ সালে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে নিবন্ধন লাভ করে। বর্তমানে কোনও প্রকল্প না থাকায় এটি সক্রিয় নেই। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে রয়েছেন উন্নতি রানী। প্রতিষ্ঠানটি কখনও নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত হয়নি। তবে, জেলা প্রশাসনের মৌখিক নির্দেশে ২০১৪ সালের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে দাবি করেছেন উন্নতি রানী।
অনিক মানবিক উন্নয়ন সংস্থা (এএমইউএস) দিঘলিয়ায় অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ক্ষুদ্র ঋণই ছিল এর মূল শক্তি। ২০১০ সালের পর ওই কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যাডভাইজর হিসেবে কাজ করছেন নির্বাহী পরিচালক নাসরিন আক্তার। তিনি খুলনা মহানগরীর নতুন রাস্তা এলাকায় অন্য প্রতিষ্ঠানে বসে কাজ করেন। দিঘলিয়ায় তার শ্বশুরালয়ে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন। প্রতিষ্ঠানের এক সময়ের ম্যানেজার মাহমুদুল হাসান লিটন এখন স্বেচ্ছাশ্রম দেন।
অনিক মানবকি উন্নয়ন সংস্থা (এএমইউএস) এর নির্বাহী পরিচালক নাসরিন আক্তার জানান, প্রকল্প না থাকায় কার্যক্রমে ঢিলেঢালা ভাব রয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি সমাজসেবা অধিদফতরের সঙ্গে গাড়িতে ঘুরেছিলেন। সে ধারাবাহিকতায় এবার আবেদন করেছেন। কাজ না করলে অভিজ্ঞতা হবে কী করে!
ডেপ নির্বাহী উন্নতি রানী বলেন, প্রকল্প না থাকায় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম কিছুটা গতিহীন রয়েছে। তবে অফিসসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কাজ করার মধ্য দিয়ে তারা একটি নতুন মাত্রায় যুক্ত হবেন।
কেএমএসএস নির্বাহী পরিচালক আফরোজা আক্তার মঞ্জু বলেন, তার প্রতিষ্ঠান খুলনার ঐতিহ্যবাহী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এইচআইভি/এইডস, ক্ষুদ্র ঋণ ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে সংস্থাটি গতিশীলভাবে এগিয়ে চলছে। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজের সুযোগ প্রতিষ্ঠানটির আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথকে সুগম করবে।