এখনও স্টেডিয়ামে গিয়ে ফুটবল খেলার অনুমোদন নেই ইরানি নারীদের। ‘ইনডোর গেম’ হিসেবেই তাদের ফুটবল খেলতে হয়। বাধ্যতামূলকভাবে পড়তে হয় ট্রাউজার-পূর্ণ হাতা জার্সি ও হিজাব। তবে ধর্মীয় বিধিনিষেধকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে ইরানের নারী ফুটবলাররা। ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা আর লক্ষ্য অর্জনের প্রবল ইচ্ছাশক্তিই তাদের স্বপ্ন পূরণের ভরসা।
গত বছর ইরানের জাতীয় ইনডোর প্রমীলা ফুটবল দল এশিয়া কাপে জয়ী হয়েছে। এতে আরও অনেক বেশি ইরানি নারী খেলাটির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। অনুর্ধ্ব ১৯ জাতীয় প্রমীলা ফুটবল দলের সাবেক সদস্য ও বর্তমানে কোচ মিনা রেজাই বলেছেন, ‘সমাজ এখন এটাকে ভালো চোখেই দেখে। ফুটবল এখন ইরানি নারীদের কাছে সবচেয়ে পছন্দের খেলা হয়ে উঠেছে। উঠে আসতে আমাকে ছোটবেলায় অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তবে আমি আপনাকে এতটুকু বলতে পারি, চেষ্টা করলে সফলতা অনিবার্য।’
ইরানে প্রমীলা খেলোয়াড়দের সমস্যা নিয়ে প্রায়ই যে প্রসঙ্গ সামনে আসে, তা হলো পোশাক সংক্রান্ত রীতি। সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রমীলা খেলোয়াড়দের ট্রাউজার ও লম্বা হাতার জার্সির সঙ্গে হিজাব পরতে হবে। ইরানি ফুটবল বিশেষজ্ঞ দোস্তমোহাম্মদির মন্তব্য, ‘ইসলাম নারীদের সামাজিক এসব কাজে অংশগ্রহণে কোনও বাধা দেয়নি। দেশে দেশে হিজাব ও পোশাক নিয়ে কিছু বাধা ও সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, কিন্তু সেটা মূল বিষয় নয়। মূল বিষয় হচ্ছে, তাদেরকে খেলতে দেওয়া হচ্ছে এবং সেটাও পেশাদার হিসেবে।’
খেলোয়াড়দের হিজাব পরা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে বিরুদ্ধ মত থাকলেও ইরানি কোচ রেজাই মনে করেন না এটা খুব বড় কোনও বাধা। তার ভাষ্য, ‘হিজাব পরে খেলা কঠিন। এতে স্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করাতে সমস্যা হয়। কিন্তু সেটা এমনও বড় কিছু না। আমাদের প্রমীলা দলের খেলোয়াড়রা হিজাব পরেই জাপান ও চীনের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে। যদি কেউ কোনও কিছু সত্যি বিশ্বাস করে এবং মন থেকে চায় তাহলে যত বাধাই আসুক আসুক না কেন তা মেনে নিয়েই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’