খোলা বাজারে চালের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও সরকার এই মুহূর্তে চাল আমদানির কথা ভাবছে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে যথেষ্ঠ উদ্বৃত্ত ও চালের মজুত আছে। তাই এই মুহূর্তে চাল আমদানির কথা ভাবছি না।’ সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপচারিতায় মন্ত্রী এ কথা জানান।
চালের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি অযৌক্তিক দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে কৃষকের কাছে ধান নেই। ধান মিলারদের কাছে। তাই হঠাৎ করে চালের মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। কেউ কৃত্রিমভাবে চালের মূল্য বাড়িয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
মন্ত্রী দাবি করেন, ‘গত দুই দিন চালের মূল্য নতুন করে বাড়েনি, কমেওনি। স্থিতিশীল রয়েছে। চালের মূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে কী করা যায় তা নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলবো।’
সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এবং অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করতে কোনও মহল কৃত্রিমভাবে চালের মূল্য বাড়িয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আগে থেকে আমি কাউকে সন্দেহ করতে চাই না। তবে এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয় বসে থাকবে না।’
গত কয়েকদিনের পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টঙ্গী এবং গাজীপুরের শতভাগ পোশাক কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে। শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আমি জেনেছি আশুলিয়ায় ৩০টির মতো কারখানায় শ্রমিকরা সোমবার কার্ড পাঞ্চ করে চলে গেছেন, কাজ করেননি। তারা সড়কে অবস্থান নিতে চেয়েছিলেন বলেও জেনেছি। শিল্প পুলিশ তাদের তুলে দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে গতকাল যে বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে তা শ্রমিকরা মেনে নেবেন ও কাজে যোগ দেবেন।’
শ্রমিক আন্দোলন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বেতন কাঠামো নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য সঠিক হয়নি। তার বক্তব্য শ্রমিকদের উষ্কে দেওয়ার শামিল। মালিকরা সর্বনিম্ন বেতন সাড়ে সাত হাজার টাকা দিতে চাইলেও প্রধানমন্ত্রী সর্বনিম্ন বেতন আট হাজার টাকা নির্ধারণ করেছেন। সেক্ষেত্রে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যটি ঠিক না।’
বেতন কাঠামো ঠিক করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে মন্ত্রী বলেন, ‘তৈরি পোশাক হচ্ছে প্রধান রফতানি খাত। রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশ এই খাত থেকেই আসে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আগ্রহ রয়েছে। তারই পরামর্শে বেতন কাঠামো ঠিক করা হয়েছে।’