যুক্তরাজ্য জাতীয়তাবাদী দলের নেতা এম ডি এনামুল হকে’র বিরুদ্ধে গতকাল চট্রগ্রামের শিকলবাহা এলাকায় আশে পাশের অঞ্চলে শিকল্বাহা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কর্মীরা দেয়াল লিখন করে ও পোস্টারিং করে। এইসময় আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের অনেক কর্মীকেও উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। বেশ কিছুদিন ধরেই এম ডি এনামুল হকের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে বসে দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রের কথা শোনা যাচ্ছিলো। শিকল্বাহা আওয়ামীলীগের তথ্য মতে এম ডি এনামুল হক দু’বছর আগে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়ে বংঙ্গবন্ধুর ছবি ছিড়ে ফেলে ও ছবির ফ্রেম ভাংচুর করে মা দিয়ে মাড়ায়।
এই সময় কিছু উৎসাহী কর্মী এম ডি এনামুল হকে’র ছবির উপর জুতো দিয়েও আঘাত করতে দেখা যায়। এই সময় আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরা একটি মানববন্ধন করে এবং তার পরপর-ই একটি ঝটিকা মিছিল বের করে। তবে আমাদের সংবাদ দাতা’র সূত্রে জানা যায় এই মিছিল থেকে বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে ইট, পাথর নিক্ষেপ করা হয় এবং কিছু দোকান-পাট বাংচুর করা হয়। এই সময় আশে পাশের এলাকা থেকে ককটেল বিষ্ফোরনের শব্দ শুনা গেলে শিকলবাহা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থা তৈরী হয়। এই সময় সকল দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন।
উল্লেখ্য যে গত ২শরা অক্টোবর জামালপুরের আদালতে এম ডি এনামুল হকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে মানহানির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় এম ডি এনামুল হক ছাড়াও যুক্তরাজ্যের বি এন পি প্রধান আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর আহমেদ গংদের বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলাতে একই সাথে আসামী হিসেবে আরো রয়েছেন বি এন পি’র মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামাতা ফাহাম আব্দুস সালাম এবং প্রখ্যাত ব্লগার ও মানবাধিকার কর্মী পিনাকী ভট্টাচার্য্য। আমাদের আদালত সূত্রে জানা যায় যে এই মামলার নাম্বার ২৮৮(১) ২০১৯। মামলার বাদী খন্দকার আলাল নামের এক ব্যাক্তি।
আমাদের সংবাদদাতার সুত্রে আরো জানা যায় যে, পোর্টাল বাংলাদেশ নামক একটি অনলাইন পত্রিকায় এম ডি এনামুল হক একটি কলাম লিখেন গত ১৭-অগাস্ট ২০১৯ ইং তারিখে, যার শিরোনাম ছিলো “স্বৈরাচার হাসিনাকে নির্মূল করা এখন সময়ের দাবী”। এই লেখাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করা হয়। এই ছাড়াও আরো অনেক ব্যাক্তির সাক্ষাৎকার এখানে উদ্বৃত করা হয় যেখানে প্রধানমন্ত্রীর পায়ু পথে ক্যানসার হয়েছে বলে বলা হয় এবং দেশের রাজনীতি নিয়ে উষ্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করা হয়।
এই লেখাতে এম ডি এনামুল হক বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে আক্রমনাত্নক একটি কলাম লেখেন যেখানে বিভিন্ন মানুষের উদ্বৃতি দিয়ে সরকারকে নির্মূল সহ প্রধানমন্ত্রীকেও নির্মুলের কথা লেখা থাকে।
এই লেখাতে মোহাম্মদ ওমর সানীর উদ্বৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘আমরা যে বাংলাদেশকে চিনতাম , জানতাম আজকের বাংলাদেশের সাথে এর কোন মিল নেই। খুনি অবৈধ হিটলারি দল/ সরকার / বর্তমান সরকার বাংলাদেশের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনা নামক এই ডাইনীকে প্রাণে নাশ না করা পর্যন্ত আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ এই হিটলারের দল থেকে মুক্তি পাবে না।’
এইসব লেখা, বক্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে মোহাম্মদ আলাল মামলা দেয় বলে জানা যায়। এদিকে শিকলবাহা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের উদ্যোগে এই দেয়াল লিখন ও পোস্টারিং-এর ফলে সেখানে জনমনে চাঞ্চল্য তৈরী হয়েছে। একটি সূত্রে জানায় সেখানে দলীয় কর্মীদের তান্ডবে শিক্লবাহা সহ আশে পাশের অন্যান্য অঞ্ছলে অনেক দোকান পাট বন্ধও হয়ে পড়ে।
এই ব্যাপারে শিকলবাহা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এম ডি এনামুল হক এই শিকলবাহা’র-ই ছেলে। তার পুরো পরিবার বি এন পি’র পক্ষে কাজ করে এবং এদের প্রধান কাজ হচ্ছে আমাদে
র প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কুৎসা রচনা করা। আমরা এম ডি এনামুল হকের বিরুদ্ধে মামলার কথা জানতে পেরেছি তাই তার নাগরিকত্ব বাতিলের আহবান জানিয়েছি। তার নামে আরো মামলা হবে। এই চট্রগ্রামের মাটি তথা দেশের মাটি তার জন্য নিষিদ্ধ এখন থেকে।’
নাগরিকত্ব বাতিলের আহবান জানিয়ে আবার তার বিচার চাইছেন কিভাবে, এই প্রশ্নের উত্তরে ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে এবং তারপর তার নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে।’
এই ব্যাপারে শিকলবাহা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা বলার জন্য তাঁর মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘এটা কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতি মধ্যে মির্জা ফকরুলের জামাতা ও পিনাকী ভট্টাচার্য্যের ব্যাপারেও তাদের নিজ নিজ শহরে আওয়ামীলীগ প্রচারণা চালাবে।’
একই সাথে তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি এই এম ডি এনামুল হক, লন্ডনের বি এন পি’র সন্ত্রাসী আবদুল মালেকের সাথে একাত্ন হয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করে। এত বড় স্পর্ধা দেখাবার জন্য শাতি তাকে পেতেই হবে।’
এই পোস্টারিং ও দেয়াল লিখনের ব্যাপারে স্থানীয় কমিশনারের সাথে যোগাযোগ করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।