জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ১২৯ দিন কারাগারে রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে তিনি শুধু একদিন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) দেখেছেন। সেদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি জনসভার ভাষণ দেখেছিলেন। কারাগার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কারাসূত্রটি জানায়, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে কারাগারের মূল ফটকের ভেতরে পুরনো অফিস ভবনে রাখা হয়েছে। সিনিয়র জেল সুপারের ওই অফিস কক্ষে একটি করে খাট, টেবিল, চেয়ার ও দু’টি ফ্যান রয়েছে। দেওয়া হয়েছে টেলিভিশন, তাতে শুধু বিটিভি দেখা যায়। তিনি কখনও বিটিভি দেখেন না। তবে একদিন বিটিভিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি জনসভা দেখেছিলেন। তবে দিন-তারিখ মনে নেই। এক থেকে দেড়মাস আগে হবে। আর পাশের রুমে গ্যাসের চুলায় রান্নার ব্যবস্থাও রয়েছে।
এ বিষয়ে গত ১২ জুন কারাগারে খালেদা জিয়ার লাইফস্টাইল নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, ‘লাইফস্টাইলের কী আছে? মানুষ ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে, পড়াশোনা করে, গল্প করে। তিনিও তাই করছেন।’
কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির এক সদস্য। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা কখনও এসব বিষয় নিয়ে তার কাছে জানতে চাইনি। তিনিও এ বিষয়ে কখনও কিছু বলেননি। সাধারণত আমরা দেখা করার সময় প্রথমে তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাই। এরপর তিনি কারাগারের বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কথা বলেন।’তিনি আরও বলেন, ‘এর বাইরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমরা দলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির চেয়ারপারসনের মিড়িয়া ইউংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘তিনি টেলিভিশন দেখেছেন কিনা আমার জানার কথা নয়। তবে তিনি যদি দেখে থাকনে, তাহলে তিনি যে উদার ও সহনশীল এটাই তার প্রমাণ। তিনি (খালেদা জিয়া) তার বক্তব্যে একাধিকবার বলেছেন, কারও প্রতি তার রাগ-ক্ষোভ নেই। তিনি সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে ওই দিন বিকালে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখন সেখানেই আছেন। ওই রায়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য আসামি তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানা করা হয়।