রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়াসহ সার্বিক রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে কঠোর হওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। একই সঙ্গে লোভী কর্মকর্তাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও সতর্ক করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ২৬ জানুয়ারি (রবিবার) আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসের বিষয়ে জানাতে ঐ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথমার্ধে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি রয়ে গেছে বলে জানালেও আদায়কৃত রাজস্ব ও লক্ষ্যমাত্রার বিস্তারিত পরিসংখ্যান জানাননি তিনি। তবে তিনি বলেন, রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শুল্ক, ভ্যাট ও আয়করে বিশেষ চেষ্টা অব্যাহত রাখব। এমনো হতে পারে, লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়ে বেশিও আদায় হতে পারে। তিনি বলেন, এই খাতে (রাজস্ব বিভাগে) প্রচুর উদ্ভাবনী কাজের সুযোগ রয়েছে। কিছু উদ্ভাবনের চেষ্টা চালাব। তবে নতুন কিছু গ্রহণ করতে গেলে নানা ধরনের প্রশ্ন দেখা দেয়। এটি একটি চ্যালেঞ্জ। রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য করের আওতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন এনবিআর চেয়রম্যান। তিনি বলেন, আওতা বাড়ানো গেলে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর চাপ কমবে। সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ভ্যাট-ট্যাক্স না দিতে হলে ব্যবসাবান্ধব। আর দিতে হলে তখনই ব্যবসাবান্ধব নয়। এটি চিরাচরিত কথা। সবই নিজের জন্য চাই। দেশ গড়ার জন্য সরকারকে দিতে চাই না। এটা চ্যালেঞ্জ। চেষ্টা করব, কোন খাতের কী ধরনের কর হার নির্ধারণ করা দরকার—তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিরো টলারেন্স ফাঁকা বুলি, মিষ্টি কথা। এখানে জিরো টলারেন্সের কথা বলে পেছনে গিয়ে অপকর্ম করে।
সংবাদ সম্মেলনে কাস্টমস দিবস নিয়ে, এনবিআরের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরার পাশাপাশি গত কয়েক বছরে শুল্ক ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে এনবিআরের নেওয়া উদ্যোগও তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, রাজস্ব আহরণের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশসহ অন্যান্য দেশের মধ্যে সীমান্ত সংস্থার মধ্যে আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বৈধ বাণিজ্যকে নির্বিঘ্ন করা কাস্টমসের লক্ষ্য। একই সঙ্গে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করাও অন্যতম লক্ষ্য।
আগামী রবিবার কাস্টমস দিবস উপলক্ষ্যে সকালে র্যালি ও সন্ধ্যায় বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সেমিনারের আয়োজন করা হবে। এতে অর্থমন্ত্রীসহ সরকারি বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন কাস্টম হাউজ ও আঞ্চলি কাস্টমস স্টেশনগুলোতে দিবসটি উদ্যাপন ও সচেতনতা বৃদ্ধিও জন্য র্যালি, আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।