জাবি, ৯ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে শিক্ষককে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটায় প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করার সময় অধ্যাপক আনোয়ার দুই শিক্ষককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকদ্বয়।
এদিকে উপাচার্যকে প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে বাধা দেয়ায় শিক্ষক ফোরামের চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে দুই সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকাল ৩টার দিকে পূর্বনির্ধারিত একটি সিন্ডিকেট সভা করতে উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে আসেন। এসময় কর্মবিরতি পালনরত সাধারণ শিক্ষকেরা প্রধান গেটে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যকে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন তাদের ধাক্কা দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন।
এ সময় পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু এবং ফার্মেসি বিভাগের প্রভাষক ফখরুল ইসলামকে উপাচার্য কনুই দিয়ে আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। পরে শিক্ষক ফোরামের প্রবল বাধার মুখে উপাচার্য ফিরে যান।
এ ঘটনার একটু পরেই জাবি শাখা ছাত্রলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মামুন খানের নেতৃত্বে কর্মীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়া শিক্ষকদের চেয়ার ও টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় সেখানে অবস্থান করা আল বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ার খসরু পারভেজকে লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। একই সময় এ শিক্ষককে প্রক্টর মজিবুর রহমান মারার জন্য তেড়ে আসেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ হামলায় আরো অংশ নেয় ছাত্রলীগ নেতা সাংগঠনিক সম্পাদক কায়কোবাদ ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাসেল। এ হামলা করার পর ছাত্রলীগ আরেকটি শোডাউন দিয়ে উপাচর্যের বাসভবনের দিকে চলে যায়। প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিক ও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বাক্য ছুড়ে দেয় ছাত্রলীগ।
সহকর্মীদের লাঞ্ছনার প্রতিবাদে দুইজন সহকারী প্রক্টর তাৎক্ষণিকভাবে পদত্যাগ করেন। এরা হলেন প্রভাষক এনামুল হক এবং সহকারী অধ্যাপক জুলকারনাইন।
এ ব্যাপারে আঘাতপ্রাপ্ত শিক্ষক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, আমি কি বলবো, তিনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে চেয়েছেন। এ সময় অধ্যাপক জামাল উদ্দিন জাতির কাছে এর বিচার দাবি করেন।
অন্য শিক্ষক ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি কান্নারত অবস্থায় বলেন, আমার পিতার মতো তিনি, অথচ আমাকে কনুই দিয়ে সজোরে ধাক্কা দিয়েছেন। আমি এর বিচার কার কাছে চাইবো?
এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার তার মোবইলে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।