একাত্তরের গণহত্যার দায় অস্বীকার এবং কারণ ছাড়া এক বাংলাদেশি কূটনীতিককে ‘বহিস্কার’র প্রতিবাদে ঢাকায় পাকিস্তানের হাই কমিশন ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চ।
গণজাগরণের পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাও বুধবার সম্পর্কচ্ছেদে না এগোলে পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাওয়ের হুমকি বুধবার বেলা ৩টার দিকে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী মঞ্চের নেতাকর্মীরা রাজধানীর গুলশান ২ নম্বর এলাকায় জড়ো হয়ে হাই কমিশনের দিকে রওনা হলে গোল চত্বরের কাছেই তাদের আটকে দেয় পুলিশ।
পুলিশ ব্যারিকেডের মধ্যেই নেতাকর্মীদের রাস্তায় অবস্থান নেন। এর মধ্যে পুলিশ পাকিস্তান হাই-কমিশন ঘেরাও করতে যাওয়া কয়েকজনকে গুলশান-২ নম্বর ও আশপাশের এলাকা থেকে আটক করেছে বলে অভিযোগ করেছে গণজাগরণ মঞ্চ।
আটকদের মধ্যে দুইজন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার। তিনি বলেন, “এ পর্যন্ত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। দুইজন মঞ্চের কর্মী বলে জানতে পেরেছি।”
পাকিস্তান হাই-কমিশনকে ‘জঙ্গিবাদের আস্তানা’ আখ্যায়িত করে ইমরান বলেন, “যেখানে জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, সেখানে জনতা যখন জঙ্গিবাদী আস্তানা ঘেরাও করতে যেতে চায় তখন পুলিশ তাদের বাধা দিচ্ছে।”
পাকিস্তান হাই কমিশন ঘেরাওয়ে গুলশান-২ নম্বর এলাকায় মঞ্চের অবস্থান থাকবে মন্তব্য করে মুখপাত্র ইমরান বলেন, “এখানে আমাদের অবস্থান থাকবে। নেতাকর্মীরা আসছে, তারপর হাইকমিশন ঘেরাও রওনা হব।”
যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মো. মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে পাকিস্তান উদ্বেগ প্রকাশ করায় দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। এরপর ঢাকায় পাকিস্তান হাই কমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি ফারিনা আরশাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর গতমাসে তাকে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেয় ইসলামাবাদ।
এর পাল্টায় ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাই কমিশনের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মৌসুমী রহমানকে ফেরত নেওয়ার আহ্বান জানায় পাকিস্তান সরকার। তবে বাংলাদেশি ওই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেখাতে পারেনি তারা। মৌসুমী রহমানকে ইসলামাবাদ থেকে অন্য দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো হয়।
এ প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়ে আসছে গণজাগরণ মঞ্চ, যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন থেকে যাদের আত্মপ্রকাশ।
তবে সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদ না করায় ঢাকায় দেশটির হাই-কমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচির ঘোষণা দেয় তারা।